
June 11, 2022
‘কফি হাউসের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই
আজ আর নেই।
কোথায় হারিয়ে গেল সোনালি বিকেলগুলো সেই।’
রেস্তোরাঁয় বা ক্যাফেতে আর সেই জম্পেশ আড্ডাটা হচ্ছে না। অথচ নিখিলেশ প্যারিসে না থেকেও ফ্রেঞ্চ টার্ট খাচ্ছে, মইদুল নতুন ঢাকায় বসেও পাচ্ছে পুরনো ঢাকার বিরিয়ানির স্বাদ । কারণ, এখন এক ক্লিকেই পাওয়া যাচ্ছে নানান কুইজিনের খাবার। ঘরে বসেই ফুড ডেলিভারিতে চলছে ভুরিভোজ।
রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাওয়া যখন বহুদিনের অভ্যাস, তখন স্বভাবতই প্রশ্ন আসে, অনলাইনে যেসব রেস্তোরাঁয় অর্ডার দিচ্ছি তাদের আদৌ কোন ফিজিক্যাল রেস্টুরেন্ট আছে?
খোঁজ নিলে দেখা যাবে, Foodpanda, Pathao Food, HungryNaki-র মতো প্ল্যাটফর্মে যেসব খাবারের ব্র্যান্ড অন্তর্ভুক্ত তাদের অনেকেরই কোন ফিজিক্যাল ডাইন-ইন ব্যবস্থা নেই। অর্থাৎ শুধুমাত্র একটা কিচেনকে কেন্দ্র করেই তারা রান্নার কাজটা চালাচ্ছে। প্যাকেজিং হচ্ছে ওখানেই, মান নিয়ন্ত্রণ থেকে সার্ভিস পরবর্তী কাস্টমার ফিডব্যাকও ঘুরছে ওই এক স্থানেই। কিন্তু এই কিচেনটি আসলে কার? মজার বিষয় হলো এই ভার্চুয়াল ব্র্যান্ডগুলির নিজস্ব কোন কিচেন নেই, তাই তারা বিদ্যমান রেস্তোরাঁগুলির সাথে অংশীদারিত্ব করছে এবং একটি ফ্র্যাঞ্চাইজ চুক্তির মাধ্যমে অনলাইন ফুড ডেলিভারির জন্য তাদের খাবার তৈরি করিয়ে নিচ্ছে।
চলুন, ভিনদেশের আবহটাও দেখে আসি। কানাডায় রেস্টুরেন্টদের মধ্যে জরিপ করে দেখা গিয়েছে ১০ টার মধ্যে ৪ টিই অর্থাৎ ৪০% ই তাদের ‘ডাইন-ইন’ রেস্তোরাঁ ব্যবসার পাশাপাশি অন্যান্য কোম্পানির ‘ভার্চুয়াল ব্র্যান্ড’ নিয়ে কাজ করছে । বাংলাদেশও কিন্তু এই চর্চার বাইরে নেই।
কেন এই ভার্চুয়াল ব্র্যান্ড?
করোনার পূর্বে অনলাইন ফুড ডেলিভারির চর্চা ছিল আধাকড়ি, তবে মহামারীর কল্যাণে এর বিস্তৃতি ঘটে রাতারাতি। এই যে অ্যাপ বা সফটওয়্যারের মাধ্যমে যেসব খাবার অর্ডার করছেন, তাদের মধ্যে অনেক ‘ভার্চুয়াল ব্র্যান্ড’ ও রয়েছে।
এর চর্চা এখন বিশ্বজুড়ে। ইউরোমনিটর ইন্টারন্যাশনালের গ্লোবাল লিড মাইকেল শেফারের মতে , আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ এই ভার্চুয়াল রেস্টুরেন্ট ইন্ডাস্ট্রির মূল্য দাঁড়াবে ১ ট্রিলিয়ন ডলারে। এহেন সময়ে ভার্চুয়াল ব্র্যান্ডকে কোনভাবেই এড়িয়ে চলতে পারবেন না। আর চলবেনই বা কেন? উড়ালপঙ্খির সেই ‘মেঘের উপর বাড়ি’কেই যেন বদলে নিয়েছে ‘ভার্চুয়াল ব্র্যান্ড’।
আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ফুডটেক ও গ্লোবাল স্টার্টআপ কোম্পানি হিসেবে Cloud Eats, Tiffin Labs প্রভৃতি বেশ সমাদৃত। এই কোম্পানিগুলোর সাথে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন ছোট ও মাঝারি (SME) রেস্টুরেন্ট ব্যবসার পরিধি বাড়ানোর জন্য ভার্চুয়াল ব্র্যান্ড গুলোর ফ্রাঞ্চাইজ নিয়ে থাকে । বাংলাদেশের আঙিনায় ঠিক একই ব্যবসা পরিচালনা করছে অন্ন (www.onnow.io) নামক একটি স্টার্টআপ কোম্পানি।
তাদের ভার্চুয়াল ব্র্যান্ডগুলোর কাজের প্রক্রিয়াটাও বেশ মজার। তারা প্রথমেই খুঁজে খুঁজে দেশের সেরা কুলিনারি এক্সপার্টদের একত্র করেন। এরপর তাঁদের তত্ত্বাবধানে সৃষ্টি হয় সম্পূর্ণ নতুন ধাঁচের কোন খাবারের ভার্চুয়াল ব্র্যান্ড। এই পুরো ‘স্বাদ- আবিষ্কারে’র কেন্দ্রই থাকে মোবাইলের অপর প্রান্তের মানুষগুলো। ভোক্তাদের কাছে এই ব্র্যান্ডগুলি উপস্থাপন করার জন্য, মার্কেটিং দল কাজ শুরু করে। বিজ্ঞাপনের বন্যা বয়ে যায় নতুন একটি ভার্চুয়াল ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষে।
মোটামুটি যখন সব রেডি, তখন এই স্টার্টআপগুলো যোগাযোগ করে আবার সেই বিদ্যমান রেস্তোরাঁগুলি সাথে। জিরো আপফ্রন্ট ফিসহ নানান সুবিধা উল্লেখ করে স্বাক্ষরিত হয় ফ্রাঞ্চাইজ চুক্তিপত্র। । প্রচার এবং স্টাফ ট্রেনিং খরচ, বাজারের ঝামেলা ছাড়া তখন এই রেস্তোরাঁগুলো শুধু কিচেন আর শেফকে পুঁজি করে দাঁড় করায় ভার্চুয়াল ব্র্যান্ড ব্যবসা।
রেস্টুরেন্ট সুনামে ষোলআনা, তবুও কেন ভার্চুয়াল ব্র্যান্ডের সাথে যুক্ত?
ভার্চুয়াল ব্র্যান্ডের ধারণাটা অনলাইন ভিত্তিক হতে পারে, কিন্তু স্বভাবজাত রেস্টুরেন্টের জন্য হুমকি নয় মোটেই।
বার্গার কিং, কেএফসির মতো গ্লোবাল রেস্টুরেন্ট কোম্পনীদের জন্য ভার্চুয়াল ব্র্যান্ডের ফ্রাঞ্চাইজ নেওয়া একেবারেই অপাংক্তেয়। কিন্তু এর বাইরেও তো রেস্টুরেন্ট আছে ভুরিভুরি। এদের মধ্যে অনেকেই করোনায় বন্ধ হয়ে গেছে, কোনটা আবার অর্ডারের অভাবে শূন্য। বোঝাই যায়, এই রেস্টুরেন্টগুলোর কিচেন একেবারেই অব্যবহৃত। ফলে, এদের মালিকেরা শুধু অপারেটিং খরচ উঠাতেই হিমশিম খান।
তবে মার্কেটের এই সমস্যাটার সমাধান খুঁজেছে ‘অন্ন’র মতো স্টার্টআপ। এখন যেকোনো লোকাল রেস্টুরেন্ট চাইলেই অন্নর সাথে যুক্ত হতে পারে এবং নিজেদের বর্তমান পুঁজি কে কাজে লাগিয়ে বাড়তি আয় করতে পারে। মেন্যু, রেসিপি যখন প্রস্তুত তখন শুধু রান্না করে খাবারটা প্যাকেজিং করলেই দায় সারা যায়! তার জন্য, তাদের প্রাঙ্গণে ইতোমধ্যেই সবকিছুই আছে।
ফলে মার্কেটিং, সাপ্লাই চেইন আর টেকনোলজির অতিরিক্ত খরচটা আর গুনতে হয় না তাদের। উল্টে
বাড়তি প্রফিটের মুখ দেখেন এই রেস্টুরেন্ট মালিকরা।
বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক অবস্থায় এর ভবিষ্যৎ
২০২২ এর মে মাসের খতিয়ানটাই দেখুন। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (ICT Division) এবং গ্রামীণফোন এক্সেলেটরের সহযোগিতায় বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ভার্চুয়াল ব্র্যান্ড প্ল্যাটফর্ম অন্ন তাদের ভার্চুয়াল ব্র্যান্ড সমূহ যেমন, Friggy’s, Wrappo, Snackmate এবং Party Pizza কে ব্যবহার করে
ঢাকাতে ২৫টি আউটলেট চালাচ্ছে সম্পূর্ণ ডিজিটাল ফ্রাঞ্চাইজ পদ্ধতিতে । এই অবস্থানের পেছনে দক্ষিণ কোরিয়ার TheVentures, সিঙ্গাপুরের Impact Collective এবং সিলিকন ভ্যালির Techne Ventures-এর সার্বিক বিনিয়োগ এবং দিক নির্দেশনা সাথে রয়েছে।
তবে এতেই শেষ না! ২০২২ সালের শেষ নাগাদ ৬০টি ভার্চুয়াল ব্র্যান্ড আউটলেট এবং ২০২৫ নাগাদ ৭০০টি ভার্চুয়াল ব্র্যান্ড আউটলেটের পরিকল্পনাও আছে অন্ন’র হাতে।
প্রযুক্তি, মেন্যু নির্ধারণ, ট্রেনিং, ভেন্ডর ম্যানেজ করা, মান নিয়ন্ত্রণ, প্যাকেজিং, অর্ডার এবং সাপ্লাই-চেইনের গোটাটাই ন্যস্ত থাকে অন্ন’র হাতে। রেস্টুরেন্ট মালিকেরা শুধু রান্নাঘরটা ব্যবহার করে প্রফিট করেন প্রত্যেক অর্ডার থেকে।
যোগ দিতে চান এই নতুন আবাহনে?
আপনি যদি রেস্টুরেন্ট বা ক্লাউড কিচেনের মালিক হন, তবে নির্দ্বিধায় হতে পারেন ‘অন্ন’র রেস্টুরেন্ট পার্টনার। এতে আপনার লাভ প্রায় ষোল আনাই। ফিক্সড সরঞ্জাম আর বিনিয়োগের রিটার্ন নিয়েও ভাবতে হচ্ছে না একদম।
If you own a restaurant or a cloud kitchen in Bangladesh, become our Restaurant Partner and improve your ROI on your existing fixed assets without spending a single Taka (৳) on Branding, R&D, and Technology.
Syed Tahmid Zaman Rashik, a Bangladeshi-born Canadian Permanent Resident, graduated from Newcastle University, UK with a First-Class Distinction in Marketing. After graduation, he completed his Masters in Strategic Marketing from the prestigious Imperial College London in 2015. At Onnow, Tahmid is the Co-Founder and CEO, who manages the overall business with a strong day-to-day focus on software development, branding, finance and partner management.